মোটা হওয়ার সহজ উপায়

মোটা মোটা হওয়ার সহজ উপায়। বর্তমান সমাজে অনেকেই আছেন যারা নিজের ওজন কিভাবে বাড়াবেন সেটি নিয়ে চিন্তিত। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে বেশিরভাগই ব্যাস্ত ওজন কমানো নিয়ে । তবে অল্প কিছু মানুষ ও পাওয়া যাবে যারা ওজন বাড়াতে চান । আসলে ওজন কমানোর চেয়ে বাড়ানো বেশি সহজ। তবে লক্ষ রাখতে হবে কিভাবে কোন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত না হয়ে ওজন বাড়ানো যায়। অর্থাৎ স্বাস্থসম্মত উপায়ে কিভাবে নিজের ওজন বাড়ানো যায় সেটি ফলো করা উচিৎ।
নারীদের ক্ষেত্রে ২.৫ শতাংশ এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ০.৭ শতাংশ ওজনহীনতায় ভোগেন। অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন পশুপাখিকে যেভাবে মোটাতাজা করানো হয় সেই পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন। বিভিন্ন হরমোন দিয়ে বা ক্যামিক্যাল দিয়ে উপায় রয়েছে তবে এই ধরনের পদ্ধতি মানব শরীরের জন্য ভীষন ঝুকিপূর্ণ। এভাবে ওজন বাড়ালে হয়ত বাড়বে তবে সেটি আর কমানো যাবে না বরং নানাবিধ ক্ষতিকর পার্শপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হবে।
স্বাস্থ বাড়ানোর জন্য যে পন্থাগুলো অবলম্বন করতে হবে
কিছু কিছু সাধারন পন্থা রয়েছে , চলুন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
যতটুকু ক্যালরী শরীর খরচ করছে তার থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ক্যালরী বেশি খেতে হবে। এজন্য কোন খাবারে কতটুকু ক্যালরী রয়েছে সেক্ষেত্রে ধারণা রাখতে হবে।
প্রচুর পরিমানে আমিষ যাতীয় খাবার খেতে হবে। পেশীতে আমিষ জমা থাকে, পেশী গঠিত হয় আমিষ দিয়ে। তাই আমিষের উপর নির্ভরতা বেশি বাড়াতে হবে।
যদি সুস্থভাবে ওজন বাড়াতে চান তাহলে যেগুলো খেতে হবে তা হলোঃমুরগীর মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি।
দিনে তিনবার বড় খাবার খেতে হবে। মাঝে মাঝে স্ন্যাকস্ খেতে হবে। মোট কথা দিনে ৫ থেকে ৬ বার শরীরে খাবার প্রবেশ করাতে হবে।
বিশেষত শর্করা বা চর্বি যাতীয় খাবার খেতে হবে। এনার্জিঘন খাবার বেশি খেতে হবে। তার মধ্যে রয়েছেঃ সস, স্পাইসেস, বাদাম জাতীয় খাবার, শুষ্ক খাবার। এক্ষেত্রে খেজুর অনেক উপকারী।
উচ্চ চর্বি যাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমনঃ দুধ, চিজ, আইসক্রীম ইত্যাদি।
এছাড়া মাংসের মধ্য রয়েছেঃ খাসির মাংস, গরুর মাংস ও মুরগীর মাংস।
বেয়ামের জন্য বেশী গুরুত্ব দিতে হবে ভারী ওজন ওঠানোর উপর। ওজন যেটি নেওয়া হয় ব্যামের জন্য বা পেশী বাড়ানোর জন্য সেটির ওজন ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। কারণ অতিরিক্ত যে আমিষ গুলো খাওয়া হয় সেগুলো যাতে মাংসের মধ্য সহজেই মিশে যায়।
এছাড়া কার্ডিও ব্যামগুলো কম করতে হবে। যেমনঃ ট্রেডমিলে দৌড়ানো, লম্বা সময় হাঁটা, দড়ি জাম্প, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। এগুলো একটু কমিয়ে দেয়াই ভালো।
মোটা হওয়ার জন্য করণীয়
প্রথমেই মানসিকভাবে একটি টার্গেট ঠিক করতে হবে যে কতটুকু ওজন আপনি বাড়তে চান। এটি আস্তে আস্তে অর্জন করতে হবে। যেমন ধরেন অল্প সময়ে বেশি ওজন বাড়ানো স্বাস্থসম্মত নাও হতে পারে।
- লক্ষটি এমনভাবে রাখুন যাতে এটিতে পৌছানো যায়। সাধারনভাবে প্রতি সপ্তাহে ০.৫ কিলোগ্রাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করা যেতে পারে। অর্থাৎ মাসে সর্বোচ্চ ২ কেজি ওজন বাড়ানো যেতে পারে। এর বেশি হলে সেটা স্বাস্থের জন্য হুমকি স্বরুপ।
- আপনার খাবারের একটি পরিকল্পনা করুন এবং সেটি মেনে চলুন।
- জাংক খাবার বা সিংগারা সমোচা জাতীয় খাবার থকে দূরে থাকুন। জাংক খাদ্য খেলে ওজন বাড়বে তবে এটি রোগ সহ ওজন বাড়বে। পেটের চর্বি বেড়ে যাবে এবং ওজন বাড়ার চাইতে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি পরিলক্ষিত হবে।অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ফলে এ বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিৎ।
- নিজের শরীরকে জানুন, অনেক সময় দেখা যায় যে পারিবারিক ইতিহাস দেখলে দেখা যায় যে পরিবারের প্রায় সবারি একই অবস্থা। বা জ্বীনগত ভাবেই শরীর শুকনা বা রোগা। তাহলে আশানুরূপ কিছু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যদিও চেস্টা চালিয়ে যেতেই হবে।
- ভালোমতো ঘুমাতে হবে এবং টেনশন করা যাবে না। চিন্তামুক্ত থাকতে হবে সবসময়।
- যদি পারেন তাহলে আপনি কি পরিমাণ ক্যালরী খাচ্ছেন তা গনণা করুন বা হিসেব করুন। খেয়াল করুন যে কিভাবে উঠানামা করবে তা মেপে চলুন।
- নিজেকে সুযোগ দিন। ওজন বাড়ানোর বিষয়ে মন যা চাইবে তাই করুন। যদি স্বাস্থ ভালো থাকে তাহলে মন কে নিজের মতো চলতে দিন।
- ওজন বাড়ানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
- এছাড়া ওজন বাড়াতে আপনাকে সপ্তাহে প্রতিদিন জিমে যেতে হবে না। বরং সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন গেলেই যথেস্ট। তবে পেশীর বেয়্যাম এর দিকে বেশি খেয়াল করতে হবে।
- বড় খাবার খাওয়ার আগে দরকার পরলে একটু হেটে নিন, যাতে খুদা টা বাড়ে। তাহলে বেশি খেতে পারবেন।
- প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবারে বেশি মনযোগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে মুরগীর মাংস, দুধ, ডিম এগুলো হতে পারে প্রোটিন এর উৎস।
- প্রতিদিন অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার যোগ করতে পারেন। যেমনঃ সাদা আলু, সাদা ভাত, পাস্তা, সাদা ব্রেড, পড়োটা ইত্যাদি।
- খাবারের টেবিলে বড় সাইজের প্লেট ব্যাবহার করুন। এক্ষেত্রে খাবারকে উতসাহিত করার জন্য।
- খাবার খাওয়ার সময় আগে আমিষ জাতীয় খাবার খেয়ে পরে শাকসবজি খান। কারন, আগে শাকসবজি খেলে পেট ভরে যেতে পারে এবং এতে করে শরীরে আমিষ কম ডুকবে।
- কিছু কিছু সেইক রয়েছে। আপনি চাইলে সেগুলো ব্যাবহার করতে পারেন। তবে বাজার থেকে কিনে খেতে চাইলে অবশ্যই প্রথমে উপাদানগুলো পর্যবেক্ষন করে নিন। এছাড়া আপনি চাইলে বাড়িতে তৈরি করেও খেতে পারেন। যেমনঃ চকলেট, কলা বা বাদাম জাতীয় খাবার দ্বারা তৈরি করা।
প্রিয় ভিজিটর, আশা করি আপনাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য আমাদের পোস্ট এ পেয়ে গেছেন। সবসময় খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত কোনকিছুই ভালো নয়। তাই ওজন বাড়াতে হলে প্রাকৃতিক পদ্ধতি অবলম্বন করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন। একটি সিডিউল তৈরি করুন এবং সেই অনুযায়ী চেস্টা করুন। সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।